
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন সাব্বির হোসেন (২০), সাজ্জাদ হোসেন ও মো. রানা (২৮)। এর আড়ালে চুরি ও ছিনতাই করতেন তাঁরা তিনজন। চুরি-ছিনতাইয়ের টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে তাঁদের দ্বন্দ্ব হয়। দ্বন্দ্ব সমাধানে সাব্বিরের বাসায় একত্রিত হন তিনজন। সেখানে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে সাব্বির ও তাঁর ভাই সাজ্জাদ ছুরিকাঘাত করে মো. রানাকে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ হাত-পা বেঁধে বস্তাবন্দী করে তিন দিন বাড়িতে ফেলে রাখেন। এরপর সাব্বিরের অটোরিকশায় করে রানার মরদেহ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় সড়কের পাশে ফেলে দেন।
আজ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার আদমজীতে অবস্থিত র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন বিবরণ দিয়েছেন র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দুই মাস পর অভিযুক্ত সাব্বির হোসেনকে (২০) আজ ভোরে রাজধানীর শ্যামপুর এলাকা থেকে আটক করে র্যাব। অপর অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসেনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে র্যাব জানিয়েছে। নিহত মো. রানা রাজধানীর শ্যামপুর জুরাইন এলাকার মৃত আবদুল করিমের ছেলে। আটক সাব্বির ওই এলাকার আবদুল রাজ্জাকের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব কর্মকর্তা তানভীর মাহমুদ বলেন, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর সকালে সদর উপজেলার ফতুল্লার সিএসআরএম ডেইরি ফার্মের সামনের সড়ক থেকে প্লাস্টিকের বস্তার ভেতর রশি দিয়ে হাত-পা বাঁধা ও কম্বল দিয়ে মোড়ানো অর্ধগলিত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং গণমাধ্যমে ভুক্তভোগীর ছবি ও পোশাক দেখে তাঁর স্বজনেরা রানার মরদেহ শনাক্ত করেন।
তানভীর মাহমুদ আরও বলেন, ১৯ ফেব্রুয়ারি র্যাব-১১, সিপিসি-১ এবং র্যাব-১০ সিপিএসসির যৌথ অভিযানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সাব্বির হোসেনকে শ্যামপুর জুরাইন এলাকা হতে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সাব্বির হোসেন জানান, সাব্বির ও রানা পূর্বপরিচিত এবং একই এলাকার বাসিন্দা। টাকার লেনদেন নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে সাব্বির এবং তাঁর ভাই সাজ্জাদ সুইচ গিয়ার দিয়ে রানার বুকে আঘাত করলে তিনি লুটিয়ে পড়েন। পরে আরও একাধিকবার তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়। আসামি সাব্বিরের বিরুদ্ধে ঢাকার কদমতলী থানায় ছিনতাইয়ের মামলা আছে বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।